1 C
New York

চেরনোবিলের সুরক্ষা কাঠামোটি আর তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঠেকাতে পারছে না: আইএইএ

গত ফেব্রুয়ারিতে ড্রোনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ইউক্রেনের চেরনোবিল বিপর্যয়ের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ প্রতিরোধী সুরক্ষা কাঠামোটি ঠিকমতো কাজ করছে না বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।

বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।

আইএইএ মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেন, ‘সুরক্ষা কাঠামোটি তেজস্ক্রিয় বিকিরণ রোধের সক্ষমতা হারিয়েছে। তবে এটির ভারবাহী কাঠামো (লোড বেয়ারিং) বা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থায় স্থায়ী কোনো ক্ষতি হয়নি।’

গ্রোসি আরও বলেন, ‘কিছু মেরামতের কাজ করা হলেও আরও ব্যাপকভাবে কাঠামোটির সংস্কার বা পুনর্গঠন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে আরও অবক্ষয় রোধ ও দীর্ঘমেয়াদি পারমাণবিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।’

১৯৮৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ থাকার সময় চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এর ফলে ইউরোপজুড়ে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে। বিপর্যয় সামাল দিতে সোভিয়েতরা রিঅ্যাক্টরের ওপর কংক্রিটের সারকোফ্যাগাস তৈরি করে, যার মেয়াদ ছিল মাত্র ৩০ বছর।

এক দশক ধরে ওই সারকোফ্যাগাস, এর নিচের ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন ও পারমাণবিক জ্বালানি অপসারণের সময় তেজস্ক্রিয় বিকিরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন এই সুরক্ষা কাঠামোটি তৈরি করা হয়। ২০১৯ সালে ১১০ মিটার উচ্চতা ও ২৬০ মিটার প্রস্থের এই ‘নিউ সেফ কনফাইনমেন্ট’ তৈরিতে খরচ হয় দেড় বিলিয়ন ইউরো (১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার)।

আইএইএ জানায়, গত সপ্তাহে স্টিলের এই কাঠামো পরিদর্শনে দেখা গেছে, গত ফেব্রুয়ারিতে ড্রোনের আঘাতে এর গঠনগত স্থায়িত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ জানায়, উচ্চ-বিস্ফোরক যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি ড্রোনের আঘাতে সুরক্ষামূলক কাঠামোটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময় ইউক্রেন দাবি করেছিল, ড্রোনটি রাশিয়ার। তবে মস্কো এ দায় স্বীকার করেনি।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রথম সপ্তাহগুলোতে, রুশ বাহিনী চেরনোবিলের পারমাণবিক স্থাপনা ও তার আশপাশের এলাকা এক মাসেরও বেশি সময় দখলে রাখে।

ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ জানিয়েছিল, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাত্রা স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল আছে। অনিয়ন্ত্রিত বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ার কোনো তথ্যও তখন পাওয়া যায়নি বলে জানায় জাতিসংঘ।

আইএইএ ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে যুদ্ধের কারণে বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পাশাপাশি একই সময়ে এই চেরনোবিলের ক্ষতিগ্রস্ত কাঠামোটি পরিদর্শন করে।

Related Articles

Latest Articles